Tuesday, February 23, 2016

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ৫টি কৌশল

হাইপারটেনসন, উচ্চরক্তচাপ কিংবা হাই ব্লাডপ্রেসার যে নামেই ডাকি না কেন বর্তমান বিশ্বে এটি একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ এবং বৃদ্ধদের মধ্যে শতকরা ৪০-৬৫ ভাগ লোক এই সমস্যায় আক্রান্ত।আশংকার বিষয় হচ্ছে এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক লোকই জানে না যে তারা হাইপারটেনসনে আক্রান্ত। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। বয়সভেদে এ রক্তচাপ বাড়তে বা কমতে পারে। কারও রক্তচাপ সবসময়ের জন্য যদি বেশি মাত্রায় থাকে (যেমন: ১৩০/৯০ বা ১৪০/৯০ বা তারও বেশি), যা তার স্বাভাবিক কাজকর্মকে ব্যাহত করে, তখনই তার উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন আছে বলা হয়।
কি করে বুঝবেন আপনার হাইপারটেনসন আছে?
বেশিরভাগ সময়ই হাইপারটেনশন বোঝার কোন উপায় থাকে না। কেউ কেউ মাথার পেছন দিকে ব্যাথার অভিযোগ করে থাকে। বিশেষ করে সকালের দিকে এ ধরনের ব্যথা অনুভূত হতে পারে। এছাড়া অনেকে মাথা ঘোরা, মাথা হালকা হালকা লাগা, চোখে ঝাপসা দেখা কিংবা কানে শোঁ শোঁ আওয়াজ-এর অভিযোগ করে থাকেন। তবে নিশ্চিত হবার জন্য মাঝেমধ্যে ব্লাড প্রেসার মেপে দেখতে হবে।

হাইপারটেনশন এর ঝুঁকি কাদের বেশী?
১. যারা শারীরিকভাবে কম পরিশ্রম করে থাকেন,
২. যারা ধূমপান ও মদ্যপান করেন,
৩. যারা বেশী মুটিয়ে গেছেন,
৪. যারা প্রাণীজ আমিষ বা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশী গ্রহণ করেন। অর্থাৎ যারা মাংস, ডিম, দুধ বা বড় মাছ বেশি খান।
৫. যারা খাবারে অতিরিক্ত লবণ খান,
৬. দীর্ঘদিন যাবত আর্সেনিকযুক্ত পানি খাচ্ছেন যারা।

হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশনা মতে নিচের নিয়মগুলো প্রতিদিনের জীবনে মেনে চললে সহজেই নিয়ন্ত্রনে রক্তচাপ। মুক্তি মিলবে হাইপারটেনসন থেকে। সেগুলো হচ্ছে-

১. শরীরের ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে।
২. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
৩. প্রতিদিন কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট জোরে জোরে হাঁটতে হবে।
৪. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে।
৫. খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি শাকসবজি ও ফলমূল যোগ করতে হবে।
বলা হয়ে থাকে, ওষুধ সেবনের চেয়ে এসব নিয়মকানুন মেনে চললে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে বেশি ফল পাওয়া যায়। এমনকি উপরের দু’টি বা তিনটি নিয়ম মেনে চললেও তা যথেষ্ট পরিমাণে রক্তচাপ কমায়।
বিশ্বজুড়ে অকালমৃত্যুর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হাইপারটেনশন! স্ট্রোক, ইসকেমিক হার্ট ডিজিস বা হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর, পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিস, ক্রনিক কিডনী ডিজিস, হাইপারটেনসিভ নেফ্রোপ্যাথি, হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথিসহ অনেক মরণঘাতি রোগের মূল কারন এই হাইপারটেনসন। তাই এই নীরব ঘাতক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো অত্যাবশ্যক।

No comments:

Post a Comment